নাজমুল ইসলাম, নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃজীবন চলে জীবনের মত কিছু স্মৃতি বন্ধন,বন্ধুত্ব ভুলার মত নয়। বিশেষ করে স্কুল কলেজর স্মৃতিই বেশি থাকে হৃদয়ে।
কর্মজীবনে বিভিন্ন মানুষের সংস্পর্শ ও বন্ধু হলেও মানুষ সবসময় চায় তার পুরোনো বন্ধু ও দিনগুলো ফিরে পেতে।
সেই আবেগও ভালবাসার টানে দীর্ঘ ৬ বছর পর আবারও একত্রিত হল নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ২০১৪ সালের ব্যাচ বন্ধুরা।
পরিণত হল এক মিলন মেলায়,
কলেজ জীবন পার করে ইউনিভার্সিটিও কর্মজীবনেই প্রবেশ করেছেন অনেকেই অনেকে আবার বিয়ে করে ছেলে সন্তান লালন পালেনে ব্যস্ত।
এসব ব্যস্তার মাঝে মাঝেই মনে হয়, দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে পারলে মন্দ হতো না! যখন গুগল থেকে দূরের কোনো শহর কিংবা অরণ্যের ছবি ডাউনলোড করি অথবা ফেইসবুক এই অপুর্ব দৃশ্য দেখি তখন আমি কিংবা আমরা আনমনে বলে উঠি, ‘এখানটায় গিয়ে থাকতে পারলে বেশ হতো!’ ঝরনার ছবি দেখে করুণ চোখে চেয়ে থাকি, সাগরের ছবি দেখে বুকের ভেতরটা হাহাকার করে ওঠে। একদিন হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আমরা প্রতিদিনই ঘুম থেকে উঠি কিন্তু জীবনের তাগিদে প্রতিদিন করে যাই।
তবুও তো এমনটা হয়, সত্যিই একদিন শত ব্যস্ততা রেখে ঘুরে বেড়ানোর দিন আসে!
আর সেই সুযোগটাও কিনা হয় ১১ ডিসেম্বর (শুক্রবার) নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ২০১৪ ব্যাচের দ্বারা।
ঠিক ধরেছেন। আমি বলতেছি দীর্ঘ ৬ বছর পরে নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ২০১৪ সালের ব্যাচের বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভ্রমণের কথা।
এই একটা দিন কোনো কাজ নেই। নিউজ আপ করার তাড়া নেই। জরুরি মিটিং নেই। অ্যালেক্সা র্যাংকিং নিয়ে চিন্তিত হওয়া নেই। বানান ভুল নিয়ে বকা খাওয়া নেই। যা আছে তার সবটুকুই আনন্দ। অনেক হাসি। অনেক গান। অনেক আড্ডা আর অনেক গল্প।
শীত শুরু মানেই বনভোজনের আমেজও শুরু। আমরা বুঝি একটু তাড়াহুড়োই করে ফেললাম। শীত আসতে না আসতেই আমরা বেড়াতে চলে গেলাম সিলেটে।
আমরা মানে আমরাই। প্রায় তিরিশ জনের মিলন মেলা। বন্ধুদের সাথে ভ্রমণ বলে কথা!
হালকা শীতের বাতাসকে পাত্তা না দিয়ে ভোর ছয়টায় পৌঁছে গেলাম বাসস্টফিজে।
সেখানে আমাদের জন্য প্রস্তুত ছিল ছোটখাটো একটি আরামদায়ক গাড়ি!
গিয়ে দেখি আমরাই প্রথম। দেখতে না দেখতে আরো অনেকেই পৌঁছে গেলেন। সবার সঙ্গে তখন কুশল বিনিময়। যারা তখনও এসে পৌঁছায়নি তাদেরকে ফোন করে তাড়া দেয়া। ঘড়িতে তখন সাড়ে আটটা বেজে গেছে।
যারা দেরি করেছে সবাই মিলে একরাশ বকাঝকার মাধ্যমে তাদেরকে স্বাগত জানানো হয়েছে।
নাজমুল সকাল থেকেই ক্ষুধায় কাতর ছিল।
কারণ তার কাঁদে ছিল টি-শার্ট ও দুপুরের খাবার সিলেট থেকে নিয়ে বাসে উঠা তাই সে ঘুম থেকে উঠেই এগুলোর ব্যবস্থায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে তাই কিছু খেতে পারেনি।
তাই সবাই গন্তব্য স্থান জাফলংয়ে গিয়ে আর দেরি না করে সকালের খাবার ডিম-খিচুড়ি বণ্টন করা হলো।
খাওয়া শেষে আমরা আবার গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরতে লাগলাম।
ততক্ষণে মোটামুটি সবাই জাফলংয়ের সেই পাথর পাড়ে জমায়েত হয়েছে।
হ্যান্ডমাইকে মতিউর,হাবিব,রানা,ইমন,সোহাগ, মুনায়েম,রুবেল,আকরাম,মুক্তার,মাছুম,রিয়াদ,মাহবুব, নাজমুল, মামুনসহ সবাই কিছু না কিছু বলতেছে সাথে আছে বাংলা,হিন্দি রিমিক্স গানের তাল।
ফেরার পথে আবারও গান, নাচ, আড্ডা। আমাদের মাঝে কেউ কেউ সিটে বসে আছে আবার সিট থাকা সত্ত্বেও অনেকে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিলাম। বাসের মধ্যে তখন অনেক হৈ-হুল্লোড়। আমরা আমাদের সিটে। রিয়াদ তার সিটে নাকডেকে ঘুমাচ্ছে। এদিকে আমি, সোহাগ, মুনাঈম মিলে গল্প করতেছি এবং আবারও কোন একদিন হারিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন বুকে নিয়ে আমরা ফিরে এসেছি আমাদের ব্যস্ততম শহরে।
এসব আত্মতৃপ্তি ও রূপ কথা এবং আল্লাহর সুন্দরতম সৃষ্টির একটি অংশ দেখতে পারার পেছেন অনেকেরই অবধান রয়েছে তার মধ্য অন্যতম হল হাবিব।
লেখকের দৃষ্টিতে এই আনন্দ ভ্রমণের সব ক্রেডিট হাবিবুর রহমান হাবিবের।